SEBA Class 10 Bengali Chapter 7 (গদ্যাংশ)
“বাংলার নবযুগ” কবি- বিপিনচন্দ্র পাল
(ক) অতি
সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
প্রশ্ন ১। ছাত্র আন্দোলন কোন
শহরে গড়ে উঠেছিল ?
উত্তরঃ ছাত্র আন্দোলন প্রথম বোম্বাই শহরে গড়ে উঠেছিল। পরে
আনন্দমোহন বসু এবং সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় কলিকাতায় ছাত্র আন্দোলন গড়ে
উঠেছিল।
প্রশ্ন ২। দাক্ষিণাত্যে আধুনিক
রাষ্ট্রজীবনের প্রতিষ্ঠাতা কে ?
উত্তরঃ দাক্ষিণাত্যে আধুনিক
রাষ্ট্রজীবনের প্রতিষ্ঠাতা হল “দাক্ষিণাত্য শিক্ষাসমাজ”
বা Deccan
Education Society.
প্রশ্ন ৩। কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলীর
প্রতিষ্ঠাতা কে ?
উত্তরঃ কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলীর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আনন্দমোহন বসু।
প্রশ্ন ৪। কোথায় প্রথম
সুরেন্দ্রনাথে বাগ্মী
প্রতিভার প্রকাশ ঘটে ?
উত্তরঃ “কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলীর”
বা “Calcutta Students’ Association”- এর রঙ্গমঞ্চেই
প্রথম সুরেন্দ্রনাথের বাগ্মী প্রতিভার প্রকাশ ঘটে।
(খ) সংক্ষিপ্ত
প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। আনন্দমোহন বোম্বাই শহরে কী দেখে আসেন ?
উত্তরঃ আনন্দমোহন বিদেশ থেকে ফেরবার
সময় বোম্বাই শহরে যেভাবে
শিক্ষিত
ও শিক্ষার্থীরা মিলে কীভাবে দেশে একটা নতুন শক্তি জাগাইবার
চেষ্ঠা করিতেছিল তা দেখে আসেন।
প্রশ্ন ২। বোম্বাইয়ের ছাত্র আন্দোলন কী নামে পরিচিত ছিল ? তার উদ্দেশ্য কী ছিল ?
উত্তরঃ বোম্বাইয়ের ছাত্র
আন্দোলনটি প্রথমে “ছাত্র
আন্দোলন” নামে পরিচিত ছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষিত
ও শিক্ষার্থীরা মিলে কিভাবে দেশে একটি নতুন শক্তি জাগানো যায়, যার ফলে সমাজের নতুন শিক্ষা অর্জন হবে।
প্রশ্ন ৩। দাক্ষিণাত্য শিক্ষক সমাজের জন্ম কীভাবে হয়েছিল ?
উত্তরঃ বোম্বাইয়ের ছাত্র আন্দোলনের থেকে ক্রমে ক্রমে দাক্ষিণাত্য
শিক্ষাসমাজের বা Deccan Education Society -এর জন্ম হয়েছিল।
প্রশ্ন ৪। কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলীর সভাপতি ও সম্পাদক কে ছিল?
উত্তরঃ কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলীর প্রথম সভাপতি ছিলন আনন্দমোহন বসু এবং সম্পাদক ছিলেন নন্দকৃষ্ণ বসু মহাশয়।
প্রশ্ন ৫। সুরেন্দ্রনাথের বিষয় কি ছিল ? তিনি কোথায় প্রথম বক্তৃতা করেছিলেন ?
উত্তরঃ সুরেন্দ্রনাথের বক্তৃতার
বিষয় — ‘ভারতে শিখ শক্তির উত্থান’ (Rise
of the Sikh power in India) ছিল।
কলিকাতার ছাত্রমণ্ডলী বা “Student’
Association”- এর রঙ্গমঞ্চেই তার
প্রথম বক্তৃতা প্রকাশিত হয়।
(গ) দীর্ঘ উত্তর লেখো:
প্রশ্ন ১। বাংলা নবযুগ প্রবর্তনে সুরেন্দ্রনাথের ভূমিকা বর্ণনা করুন।
উত্তরঃ সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
(১৮৪৮-১৯২৫) বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ
ছিলেন। তাকে "রাষ্ট্ৰবন্ধু" নামে অভিহিত করা হয়। তিনি শিক্ষাবিদ,
স্বাধীনতা সংগ্রামী,
সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ হিসেবে বাঙালি সমাজকে
নতুন দিশা দেখিয়েছিলেন। তার ভূমিকা বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ
। সুরেন্দ্রনাথ
কলকাতার মেট্রোপলিটন
ইনস্টিটিউশন (বর্তমান বিদ্যাসাগর কলেজ)-এর
প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ।
শিক্ষার প্রসারে তিনি নারীশিক্ষা এবং
জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে শিক্ষার সুযোগ প্রসারিত করার পক্ষে ছিলেন।
বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের
মধ্যে ছিলেন। তিনি ব্রিটিশবিরোধী
আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন ।
১৮৮৩ সালে ইলবার্ট বিলের সমর্থনে আন্দোলন
করে ইংরেজ শাসকদের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ
সংগঠিত করেন ।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা
সদস্য (১৮৮৫) ছিলেন
এবং দুইবার কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন (১৮৮৬, ১৮৯৮)।
সুরেন্দ্রনাথ তার সম্পাদিত ‘দ্য
বেঙ্গলি’ পত্রিকার মাধ্যমে
ব্রিটিশ শাসনের অন্যায় এবং বাঙালির অধিকার সম্পর্কে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখেন।
তিনি সংবাদপত্রকে জনগণের শক্তি হিসেবে
প্রতিষ্ঠা করেন এবংজাতীয়তাবাদী চেতনা
ও রাজনৈতিক সচেতনতার প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
শিক্ষাক্ষেত্রে ও সামাজিক উন্নয়নে তার
উদ্যোগ বাংলার নবজাগরণকে ত্বরান্বিত করে । তার বক্তব্য, নেতৃত্ব
ও শিক্ষামূলক প্রচেষ্টা বাংলা সমাজে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদার বোধ জাগিয়ে তোলে।
তিনি আনন্দমোহন বসুর সাথে
মিলিত হয়ে বোম্বাইয়ের এক ছাত্রমণ্ডলী অভিনব আন্দোলনে
অনুপ্রাণিত হয়ে একই ধরনের ছাত্রমণ্ডলী গঠন করে এবং এই ছাত্রমণ্ডলীর দ্বারা দেশের
মধ্যে নতুন রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়। সুরেন্দ্রনাথই প্রথম কলকাতার
ছাত্রমণ্ডকে অবলম্বন করে সেকালের শিক্ষানবীশ বাঙ্গালীদের রাষ্ট্রীয় জীবন
ক্লাস্রেট ছিল। সুরেন্দ্রনাথ একজন বাগ্মী প্রতিভাবান ব্যক্তি।
তাঁর এই বাগ্মী প্রতিভার সর্বপ্রথম পাওয়া যায় কলিকা ছাত্রমণ্ডলী স্টুডেন্টস
অ্যাসোসিয়েশন- এর রঙ্গমঞ্চে। 'শিখ শক্তির উত্থান' বিষয়
সম্পর্কে আপনি যে তথ্য দিয়েছিলেন তা থেকে কলিকাতা সম্পূর্ণ ছাত্র মন্ডলী অন্তরে
অভূতপূর্ব ভাবের বন্যা শুরু হয়েছিল। আমাদের সকলের অন্তর্গত সুরেনাথই সর্বপ্রথম
শিখেন্দ্রের স্বাধীনতার প্রতিবাদের বর্ণনা । সকলের
কাছে তাঁর সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।
ইরানের ইতিহাসে ভারত মহাকাব্যের কেবলমাত্র যে আদর্শ ফুটে উঠেছিল তা সুরেন্দ্রনাথের বক্তৃতার মধ্যবর্তী সকলের কল্পনাকে বাস্তবে প্রমাণ দিয়েছিল। তাঁর বক্তৃতা বাংলার নবযুগের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। নতুন রাষ্ট্র কর্মের এবং রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্ম হয়। সুতরাং, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা নবযুগের অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন। তার চিন্তাধারা ও কর্মধারা বাঙালিকে সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
প্রশ্ন ২। বাংলা জাতীয় চেতনার বিকাশে আনন্দমোহন বসুর অবদান কতখানি আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলা
জাতীয় চেতনার বিকাশে আনন্দমোহন বসুর অবদান উল্লেখযোগ্য
ও ঐতিহাসিক। তিনি একজন প্রগতিশীল সমাজসংস্কারক, শিক্ষাবিদ
এবং স্বদেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে উনিশ শতকের বাংলা নবজাগরণের গুরুত্বপূর্ণ
ব্যক্তিত্ব। তার কর্মকাণ্ড বাংলার সমাজ, রাজনীতি
ও শিক্ষা ক্ষেত্রে জাতীয় চেতনার সঞ্চারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আনন্দমোহন বসু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের
প্রথমদিকের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি ১৮৮৩ সালে
বেঙ্গল ল্যান্ডহোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন
এবং পরে
ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস-এর
নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে
ভারতীয়দের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।
আনন্দমোহন বসু নারী শিক্ষার প্রবক্তা
ছিলেন ।
তিনি বেথুন কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থেকে নারী শিক্ষার
প্রসারে ভূমিকা রাখেন । ১৮৭৮ সালে তিনি
সিটি কলেজ
প্রতিষ্ঠা করেন, যা
পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । শিক্ষাক্ষেত্রে
সংস্কারের মাধ্যমে তিনি বাংলায় জাতিগত আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত করতে চেষ্টা করেন।
তিনি ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনের সঙ্গে
যুক্ত ছিলেন এবং সমাজে কুসংস্কার ও অসাম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন । বিধবা বিবাহ,
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং নারী অধিকারের পক্ষে
তিনি শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেন। আনন্দমোহন
বসু বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম
ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তার নেতৃত্বে
বাঙালির মধ্যে জাতীয় চেতনা ধীরে ধীরে জাগ্রত হয়, যা
পরবর্তীতে স্বাধীনতা আন্দোলনে অনুপ্রেরণা জোগায়। তিনি বাংলায় শিক্ষা ও
সাহিত্যচর্চাকে উৎসাহিত করেন এবং মাতৃভাষার মাধ্যমে জ্ঞানের বিস্তারকে গুরুত্ব
দেন।
বিদেশ থেকে ফেরার
সময় বোম্বাই শহরে যেভাবে
শিক্ষিত
ও শিক্ষার্থীরা মিলে কীভাবে দেশে একটা নতুন শক্তি জাগাইবার
চেষ্ঠা করিতেছিল তা দেখে আসেন। বোম্বায়ের ছাত্রমণ্ডলী সম্প্রদায়ের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সুরেন্দ্রনাথের তাদের সাথে মিলিত হয়ে কলকাতায় এই ধরনের
ছাত্রদল ১৮৭৫ শেষের দিকে গঠন করেন। আনন্দমোহন
বসু ছিলেন এই ছাত্রমণ্ডলীর মিত্র। এই ছাত্রমণ্ডলীকে আশ্রয় করে আনন্দ মোহন নিজের
নতুন রাষ্ট্র কর্মের দেশের মধ্যে উপস্থিত থাকতে। আনন্দমোহন বসু সর্বপ্রথম কলিকাতা
সম্পূর্ণ ছাত্রমণ্ডলীকে রাষ্ট্রীয় জীবন গড়বার পথের পথ দিয়েছিলেন। আনন্দমোহন হাত
ধরেই 'কলকাতা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন' জাগ্রত হয়।
আনন্দমোহন বসুর অবদান শুধু শিক্ষা ও
সমাজসংস্কারে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং
তার কাজের মাধ্যমে বাংলার জাতিগত ও রাজনৈতিক চেতনার বিকাশে এক নবজাগরণের সূচনা
ঘটে। তার চিন্তাধারা ও কর্মকাণ্ড বাঙালির জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রেরণার অন্যতম
ভিত্তি ছিল।
প্রশ্ন ৩। সুরেন্দ্রনাথ ও
আনন্দমোহন এর সম্পর্কে যা জানা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃ
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (1848-1925):
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একজন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতা। তাকে "রাষ্ট্রগুরু" বলা হয়। রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথের (১৮৪৮-১৯২৫) জন্ম বারকপুরের মণিরামপুর পল্লিতে হয়। ১৮৭১ সালে আই. সি. এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। শ্রীহট্ট জেলা সদর ম্যাজিস্ট্রেট থাকার সময় মতভেদ পুলিশ পদচ্যুত হন। তিনি ভারতের প্রথম সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ব্রিটিশ সরকার বর্ণবৈষম্যের কারণে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে তিনি জাতীয় আন্দোলনে সক্রিয় হন । সুরেন্দ্রনাথ 1876 সালে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে কংগ্রেসে মিশে যায়। তিনি দুইবার কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫) প্রতিবাদ করা তাঁর অশেষ ভূমিকা ছিল। তাঁর অসাধারণ বাগ্মিতা ও ব্যক্তিত্বের জন্য ১৮৯৫ ও ১৯০২ সালে জাতীয় দলের নেতা হন। তাঁর লেখা 'A Nation in Making' বিখ্যাত । তার বিখ্যাত আত্মজীবনী হল "আ লাইফ অফ নেশন বিল্ডার"। শিক্ষাক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি বেথুন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন এবং পরবর্তীতে রিপন কলেজ (বর্তমান সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) প্রতিষ্ঠা করেন।
আনন্দমোহন বসু (1847-1906):
আনন্দমোহন বসু ( ১৮৪৭-১৯০৭ )
ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি আইনজীবী, পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক ও রাষ্ট্রনেতা । তাঁর জন্ম ময়মন সিংহ রাষ্ট্রপতি জয়সিদ্ধি
সীমান্ত (বর্তমান রাজনীতি) হয়েছিল। তিনি
প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে গণিতে স্নাতক এবং পরে ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন। আইনজীবী হিসেবে কলকাতা হাইকোর্টে কাজ করেছেন। এম. এ. পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় আনন্দমোহন বসু
প্রথম স্থান অধিকার। অংকশাস্ত্রে তাঁর বিশেষ প্রদর্শনিতা ছিল। ১৮৭৪ সালে কেমব্রিজ
বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিষয় আলোচনা উপাধি ' র্যাংলার ' লাভ করেন। আনন্দমোহন 1885
সালে কংগ্রেস প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রাখেন এবং 1898 সালে
কংগ্রেসের সভাপতি হন। তিনি ব্রাহ্ম সমাজের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন । তিনি নারীশিক্ষা
প্রসারে বিশেষ ভূমিকা
রাখেন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে উদ্যোগী হন।
সিটি কলেজ, কলকাতা তার
অন্যতম অবদান। সেই বছরই
ব্যারিস্টার হয়ে বিলাত থেকে দেশ ফেরেন। ১৮৯৮ সালে
জাতীয় অধ্যায়ের মাদ্রাজ অর্ন্তভূক্ত হন।
সুরেন্দ্রনাথ ও আনন্দমোহন উভয়েই ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।
● টিকা: নিজে লেখো:
গোপাল কৃষ্ণ গোখলে, মান্য তিলক, রানাদে, হিন্দু
স্কুল, তেগ বাহাদুর, গুরু গোবিন্দ।
উত্তরঃ
গোপাল কৃষ্ণ গোখলে: গোপাল কৃষ্ণ গোখলে (১৮৬৬ - ১৯১৫) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমাজসেবক, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাজনীতিবিদ।তিনি ১৮৬৬ খ্রিস্টব্দে ৯ ই মে মহারাষ্ট্রের কোঠাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৮৪ খ্রিস্টব্দে এলফিনস্টোন থেকে গ্র্যাজুয়েশন পাশ করেন। গোখলে ১৮৮৯ খ্রিস্টব্দে স্থানীয় জাতীয় দলের সদস্য হন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান সার্ভেন্টস অফ ইন্ডিয়া সোসাইটি-এর প্রতিষ্ঠাতা। গোখলে সত্যবাদিতা, উদারতা এবং সমাজের প্রতি গভীর দায়বদ্ধতার জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ শাসনের সমালোচনা করলেও সরাসরি বিদ্রোহে বিশ্বাসী ছিলেন না। বরং সংবিধানিক এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের পক্ষে মত দিয়েছিলেন। মহাত্মা গান্ধী গোখলেকে তার রাজনৈতিক গুরু হিসেবে বিবেচনা করতেন। তিনি ১৯০২ সালে বোম্বে বিধান পরিষদের সদস্য হন এবং ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন নীতির ত্রুটি তুলে ধরে জনগণের স্বার্থ রক্ষায় ভূমিকা রাখেন।১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় দলের বারাণসী অধিবেশনে আত্মর ভাষণে গোপালকৃষ্ণ গোখলে বয়কট আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানান। দাক্ষিণা শিক্ষা সমাজ বা ডেকান এডুকেশন সোসাইটি-তেও তিনি সদস্য হয়েছিলেন। তিনি বাল্যবিবাহকে কঠোরভাবে কটাক্ষ করেন এবং প্রত্যাহার করার চেষ্টা করেন। ১৯১৫ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারী ব্যক্তিত্বের দেহাবসান এই মহান। গোপাল কৃষ্ণ গোখলের জীবন ও আদর্শ শুধু ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ক্ষেত্রেই নয়, বরং আধুনিক ভারতের সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামো গঠনে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
লোকমান্য তিলক: লোকমান্য তিলক ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং একজন প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী নেতা। তার পুরো নাম বাল গঙ্গাধর তিলক। তিনি ‘লোকমান্য’ উপাধি লাভ করেন, যার অর্থ “জনগণের দ্বারা সম্মানিত”। উনি ১৮৫৬ খ্রিস্টব্দে ২৩শে জুলাই তারিখে মহারাষ্ট্রের রত্নগিতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিলক একজন সংস্কৃতিমনস্ক মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দাক্ষিত্য শিক্ষা সমাজের সদস্য হয়েছিলেন। তিলক ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেন এবং জনগণকে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে অনুপ্রাণিত করেন। তার বিখ্যাত উক্তি ছিল: “স্বরাজ আমার জন্মগত অধিকার এবং আমি তা অর্জন করব”। তিলক শিক্ষা বিস্তারের জন্য কাজ করেন। তিনি ‘ডেকান এডুকেশন সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা তিলক দুটি সংবাদপত্রের সম্পাদক ছিলেন — ‘কেসরি’ (মারাঠি ভাষায়) ও ‘মারাঠা’ (ইংরেজিতে)। এই পত্রিকাগুলি ব্রিটিশবিরোধী মনোভাব প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তার অন্যতম বিখ্যাত গ্রন্থ হল ‘গীতা রহস্য’, যেখানে তিনি কর্মযোগের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন। ১৯২০ খ্রিস্টব্দে ১ লা আগস্ট বিপ্লবী মহাপ্রয়াণ মহান এই মহান। লোকমান্য তিলক ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সমাজ সংস্কারক। তার সাহসী নেতৃত্ব, বুদ্ধিবৃত্তিক অবদান এবং দৃঢ় দেশপ্রেম তাকে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে।
রানেদে: তার পুরো নাম ছিল মহাদেব
গোবিন্দ রানাদে, তিনি ১৮৪২ খ্রিস্টব্দে ১৮ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। সাত বছর আগে
তিনি সমাজসেবায়যুক্ত নিযুক্ত হন এবং বাল্যবিবাহ রোধ এবং বিধবা বিবাহ প্রচলনের
ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।এমনকি জাতিভেদ প্রথা ও সামাজিক
কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। বোম্বে হাইকোর্টের
বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইতিহাস ও অর্থনীতির উপর বিভিন্ন গ্রন্থ
রচনা করেন। তিনি প্রার্থনা সমাজ ও
ইন্ডিয়ান সোশ্যাল কনফারেন্স
প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ভারতের
জাতীয় আন্দোলনের প্রথম দিককার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। সমাজে
উদারনৈতিক ভাবধারা এবং সংস্কারের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য তিনি বিশেষভাবে স্মরণীয়। ১৯০১
খ্রিস্টাব্দে ১৬ জানুয়ারি পুনঃ মহান বিপ্লবীর দেহাবসান এই খেলা।
রানেদে কেবল একজন বিচারক বা
সমাজসংস্কারকই নন, বরং ভারতীয়
নবজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত ছিলেন। তার চিন্তাধারা এবং কাজ আজও প্রাসঙ্গিক ও
অনুকরণীয়।
হিন্দুস্কুল: হিন্দু স্কুল (Hindu School) ভারতের প্রাচীনতম ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির একটি। এটি কলকাতার ধর্মতলায় অবস্থিত এবং ২০ জানুয়ারি ১৮১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার সময় এটি হিন্দু কলেজ নামে পরিচিত ছিল। রামমোহন রায়, দ্বারকানাথ ঠাকুর, রাধাকান্ত দেব, এবং ডেভিড হেয়ার প্রমুখ শিক্ষানুরাগীদের উদ্যোগে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে । হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাত্রদের জন্য প্রথমে এটি প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে এটি সর্বজনীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়। ভারতীয় নবজাগরণের সূচনায় এই স্কুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই স্কুলে বিজ্ঞান, কলাবিভাগ ও প্রশিক্ষণ বিভাগগুলি শুধুমাত্র ছেলেদের জন্য প্রযোজ্য । এটির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ ভারতের শিক্ষাব্যবস্থায় আধুনিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো ।
তেগ বাহদুর: গুরু তেগবাহদুর
১৬২১ খ্রিস্টব্দের ১লা এপ্রিল পাঞ্জাবের অমৃতসরে গুরু হর গোবিন্দের পরিবারে জন্মগ্রহণ
করেন। তেগ বাহাদুরের নাম ‘তেগ’ অর্থে বীরত্ব এবং
‘বাহাদুর’ অর্থে সাহসিকতা বোঝায়। তিনি শিখ ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক
ও বীর ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।
তিনি ছিলেন শিখ ধর্মের নবম গুরু। তাঁর একটি পশু ও পাঁচজন পুত্র। মুসলিম ও শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই করা তাকে কঠোরভাবে প্রথ্যাহারে সোচ্চার হওয়া। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব যখন জোরপূর্বক কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করছিলেন, তখন তেগ বাহাদুর তাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন এবং সেইজন্য আওরঙ্গজেবের আদেশে তাকে দিল্লির চাঁদনী চকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তার এই আত্মত্যাগ ধর্মীয় স্বাধীনতার অন্যতম প্রতীক হয়ে ওঠে। তিনি ১৬৭৫ খ্রিস্টব্দে ১১ই নভেম্বর দিল্লিতে শেষ নিঃশ্বাসত্যাগ করেন। গুরু তেগ বাহাদুর অহিংসা, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং মানবতার মূর্ত প্রতীক ছিলেন। তিনি শিখ ধর্মে মরমী ভাব ও ধ্যানের উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
গুরু
গোবিন্দ: গুরু গোবিন্দ (গুরু
গোবিন্দ সিং) শিখ ধর্মের দশম গুরু এবং শিখ সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ঐতিহাসিক ও
ধর্মীয় নেতা। তিনি ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে ২২শে
ডিসেম্বর তারিখে পাটনায় জন্মগ্রহণ
করেন এবং ৪১
বছর বয়সে সন ১৭০৮ খ্রিস্টাব্দে ৭ ই অক্টোবর
দেহত্যাগ করেন। তাঁর পিতার নাম
গুরুতেজ বাহাদুর এবং মাতা উত্তর মাতা গুজরি । তাঁর
মূল অবদান শিখ সম্প্রদায়কে একটি সুসংগঠিত ও সামরিক শক্তিতে পরিণত করা। তিনি
সংস্কৃত পারসিক এবং যুদ্ধ বিষয়ক শিক্ষা লাভ করেন।
গুরু গোবিন্দ শিখ ধর্মের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক আদর্শ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি খালসা পন্থার সূচনা করেন। ১৬৯৯ সালে বৈশাখী উৎসবে তিনি খালসা সম্প্রদায় গঠন করেন, যা শিখদের ন্যায়পরায়ণতা, শৌর্য ও আত্মত্যাগের প্রতীক। তাঁর লেখা ধর্মীয় গ্রন্থ দশম গ্রন্থ (দশম গ্রন্থাবলি) শিখ সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। গুরু গোবিন্দ ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, মানবতা, এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের শিক্ষা দেন। তাঁর নেতৃত্ব শিখদের কেবল ধর্মীয় ক্ষেত্রে নয়, রাজনৈতিক শক্তিতেও পরিণত করেছিল।
টিকা :
সুরেন্দ্রনাথ: রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথের (১৮৪৮-১৯২৫) জন্ম বারাকপুরের মণিরামপুর পল্লিতে হয়েছিল। ১৮৭১ সালে আই. সি. এস. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। শ্রীহট্ট জেলায় সরকারি ম্যাজিস্ট্রেট থাকার সময় সরকারের সঙ্গে মতভেদ হওয়ায় পদচ্যুত হন। বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫) রোধ করায় তাঁর অশেষ ভূমিকা ছিল। তাঁর অসাধারণ বাগ্মিতা ও ব্যক্তিত্বের জন্য ১৮৯৫ ও ১৯০২ সালে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচতি হন। তাঁর লেখা 'A Nation in Making' বিখ্যাত। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এতে বর্ণিত আছে।
আনন্দমোহন: হনি আনন্দমোহন বসু (১৮৪৭-১৯০৭)। পণ্ডিত,
শিক্ষাব্রতী, সমাজসেবক
ও রাষ্ট্রনেতা। এর জন্ম ময়মন সিংহ জেলার জয়সিদ্ধি গ্রামে (বর্তমান বাংলাদেশে)। এম.
এ. পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় আনন্দমোহন বসু প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। অঙ্কশাস্ত্রে
তাঁর বিশেষ পারদর্শিতা ছিল। ১৮৭৪ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিষয়ক
সর্বোচ্চ উপাধি 'র্যাংলার'
লাভ করেন। সেই বছরই ব্যারিস্টার হয়ে বিলাত
থেকে দেশে ফেরেন। ১৮৯৮ সালে জাতীয় কংগ্রেসের মাদ্রাজ অধিবেশনের সভাপতি নির্বাচিত
হন।
প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি: জন্মসূত্র গুজরাটি। কলকাতায় এসে সেকালে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন। আমেরিকায় গৃহযুদ্ধের সময় প্রচুর তুলো রপ্তানি করে বিপুল অর্থ ও বিত্ত উপার্জন করেন। পরে বোম্বাইয়ের (মুম্বাই) তুলোর বাজারেও তাঁর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। জীবনের উপার্জন থেকে ৬০ লক্ষ টাকা দান করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে যে দু’লক্ষ দিয়েছিলেন তা থেকে ১৮৬৮ সালে P.R.S. (Premchand Roychand Scholarship) বৃত্তি চালু এবং তা আজও অব্যাহত আছে।
সংস্কৃত কলেজ : কলকাতায় সংস্কৃত কলেজ ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ ফ্রেব্রুয়ারি তারিখে প্রতিষ্ঠা করা হয়। বউবাজারের এক ভাড়া বাড়িতে কলেজের সুচনা হয় । দু’বছর পরে বর্তমান স্কোয়ারে কলেজ ভবনটি স্থানান্তরিত হয়। সংস্কৃত ভাষার নানান বিষয় শেখানোর উদ্দেশ্যে কলেজটি নির্মাণ করা হয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০ ১৮৯১) এই কলেজের ছাত্র ছিলেন পরে অধ্যক্ষ হন। ১৮৬০ সালে কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন লাভ করে।
সত্যেন্দ্রনাথ
ঠাকুর: জোড়াসাঁকো (কলকাতা) ঠাকুরবাড়ির অন্যতন বিখ্যাত সন্তান ছিলেন সতেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের দ্বিতীয় পুত্র
রবীন্দ্রনাথের বড় ভাই এবং ঠাকুর পরিবারের অন্যতম
প্রগতিশীল সদস্য ছিলেন। তিনি ১৮৬৪ সালে
ভারতে প্রথম আই. সি. এস (ভারতীয় সিভিল সার্ভিস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ।
সত্যেন্দ্রনাথ সুলেখক ছিলেন। তাঁর রচনার মধ্যে আছে ‘সুশীলা ও
বীরসিংহ’ নাটক, ‘বোম্বাই
চিত্র’, ‘বালকথা’, ‘বৌদ্ধধর্ম’
ইত্যাদি প্রধান। তিনি বাল
গাঙ্গাধর তিলকের গীতাভাষ্য বাংলায় অনুবাদ করোছিলেন। সত্যেন্দ্রনাথ
ঠাকুরের জীবনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল নারীমুক্তির আন্দোলন। তার স্ত্রী
জ্ঞানদানন্দিনী দেবীকে নিয়ে তিনি বাংলার নারীসমাজে নতুন ধরণের আধুনিক জীবনযাত্রার
সূচনা করেন।